ভালোবেসে কষ্ট পাওয়ার গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ভালোবেসে কষ্ট পাওয়ার গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মন খারাপের ট্রেন - লভ স্টোরি

অসাধারন ভালোবাসার গল্প
একটা ভালোলাগা, একটা বুক ফাটা কষ্ট।
সবকিছু মিলেমিশে আছে এই গল্পে।
Bhalobashar Golpo on Rail Station

হঠাৎ একটা Msg পেয়ে রীতিমত চমকে উঠল সুস্মিত।
নম্বর টা খুব পরিচিত ..
এ নম্বর কোনোদিনও ভুলবার নয়। 
কোনোদিনও যে আবার  এ নম্বর থেকে MSG আসবে ভাবেনি কোনোদিনও.. 
"তোর সেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে দেওয়া Show Piece টা নিয়ে যেতে পারবি ?? আমি মেস ছেড়ে দিচ্ছি , বাড়ি থেকেই যাতায়াত করব ..তো বাড়িতে ম্যানেজ করতে পারবনা " ...
সে বিষ্মিত হয়ে Reply দিল , " হ্যা! ফেরত দিয়ে দিস ! 
কোথায় Meet করবি বল" ..  
সুস্মিত এর হৃদস্পন্দন টা বেড়ে গেল , কতদিন পর চেনা চেনা লাগছে তার এই শব্দ গুলো , ইনবক্স থেকেও পুরোনো চেনা মেঠো গন্ধ পেল সে  , কতদিন সে  দেখেনি আহেলি কে..। 
এই সেই আহেলি , যার সাথে সারাদিন হন্যে হয়ে হাটত সে , যার সাথে টেক্সট এর চুপচাপ আনাগোনায় কথা হত সারাদিন , যার মিসকল এর আওয়াজে ঘুম ভাঙতো, ঘুমোতে যাওয়াটাও হত ওর "গুড নাইট" নামক ঘুমপাড়ানি শব্দটির মধ্যে দিয়ে, যার সাথে এক ছাতায় উদ্যম বৃষ্টি তে ভিজেছিল, গঙ্গার পাড়ের উত্তাল হওয়ায় ওর উড়ন্ত চুলের গন্ধ নিয়েছিল .. কত কথা , কত ভালোবাসা, কত অভিমান, রাগ .. নাহ! 
সব কোথায় হারিয়ে গেল ? 
স্মৃতিগুলি মনের চিলেকোঠায় সকালের রোদ্দুরের মতো উকি দিতে শুরু করল ..।
বুকটা বড্ড ভারী হয়ে গেল ...। 
তার ভাবনার রাশিমালায় দাড়ি টানলো , Msg টুংটাং আওয়াজ , .. 
"শোন কাল স্টেশন এ ৩টের সময় দাড়াস ! 
আমি ট্রেন থেকে নেমেই তোকে দিয়েই চলে যাব.. ওকে? " .. 
সুস্মিত reply করল , " হম ওকে, একটা Question করব ?" .. 
তৎক্ষণাৎ reply এল , "কর" । 
সুস্মিত কৌতূহলী চোখে TYPE করতে লাগল , " তুই তো বলেছিলি Show Piece টা ভেঙে ফেলেছিস .. তো? .. "
জবাব এল , "নাহ! ভাঙ্গিনী রে , বেশ যত্নেই আছে, কিন্তু তোর স্মৃতি আর আগলে রাখতে চাইনা , কাল এসে নিয়ে যাস প্লিজ" .. 
সুস্মিতের বুকের ভিতর টা মুচড়ে উঠল , একফোটা চোখের জল গাল বেয়ে স্মার্টফোনটার উপর পড়ল  ... 
Tears - Bhalobasar Golpo - Kanna - Chokher Jol

সেদিন রাতে কিছুতেই ঘুম আসছেনা সুস্মিত এর .. নানা চিন্তা-ভাবনার-স্মৃতি-উত্তেজনার বড় বড় ঢেউয়ে মনের কিনারা টা অস্থির হয়ে উঠছে বারবার ..। 
"ও কি সেই আগের মতোই আছে , না এই দেড় বছরেই পাল্টে গেছে অনেক টা, কতদিন ওর Innocence মাখানো সুন্দর মুখটা দেখা হয়না..।
কত আদরে-অনুরাগে কানের পাশ থেকে সে চুল সরিয়ে ঠোঁটের চিন্হ একে দিত মসৃন গাল গুলোয় .. আর আজ ? .. 
বুকটা হুহু করে উঠল , খুব একা লাগল সুস্মিত এর .. তার ঘরের অন্ধকারগুলো যেন তাকে চেপে ধরল ...।
"নাহ! কাল নীল জামাটা পরে যাব , ওর খুব ভালো লাগতো নীল জামাটায়...।
''ও দেখুক সুস্মিত কতটা পাল্টে গেছে, কতটা Develop করেছে নিজেকে"..ওই তো বলতো "তোকে আমার পাশে একদম মানায় না" .. আজ দেখুক সেই বেমানান সুস্মিত কতটা পাল্টে নিয়েছে সময়ের সাথে সাথে .. ।
তার কষ্টগুলো অভিমানে রূপান্তরিত হতে লাগল ... । 
অনেক কষ্টে চোখ ঘুম আনার চেষ্টা করল .. কিন্ত ঘুমটা যেন আগের সেই টেক্সট msg এর টুংটাং শব্দ টা কেড়ে নিয়েছে ; 
আজ কেন এত মনে পড়ছে আবার ওকে ? 
বেশ তো ভুলেই এসেছিল প্রায় ; কেন আবার আজ যে শক্ত স্মৃতির বাঁধ গড়েছিল ধীরে ধীরে , তা এক লহমায় চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিল আহেলি ..।
 সুস্মিতের তাদের প্রথম meet করার দিনটা খুব মনে পড়ল। 
প্রায় ছমাস ফেসবুক এ কথা বলা আর বন্ধুত্বের পর.. যখন ওরা finally decide করেছিল যে "চল! meet করা যাক , কাছাকাছিই তো থাকি " ..।
আহেলির থেকে সুস্মিত এর দূরত্ব একটি স্টেশন মাত্র , আহেলি বলেছিল , 
"শোন! আমি কাল ৮.০৮ এর লেডিস ট্রেন টা ধরব , তুই কি তার আগে  আসতে পারবি আমাদের এই স্টেশনটায় ? এত সকালে প্রবলেম হবে না তো ? " .. 
খুশি - উত্তেজনা -আনন্দে ভরপুর সুস্মিত বলেছিল না! না! , আমি পৌঁছে যাব স্টেশন এ , তুই ব্যাস সময় মতো আসিস".. 
রীতিমতো আকাশে ভাসছিল সুস্মিত .. সেকি আনন্দ , কত ভবিষ্যৎ এর জীবনের চিন্তা-ভাবনা, কত স্বপ্ন, কত উত্তেজনা ...।
..
সেইরকম উত্তেজনা কেন আবার হচ্ছে ?
নিজেকে আনমনে প্রশ্ন করল সুস্মিত.. 
ঘরের জমাটি অন্ধকার গুলো থেকে কোনো উত্তর পেলনা সে।
নাহ! সেদিনও রাতেও ঘুম আসেনি তার।
সুন্দর এক নতুন জীবনের স্বপ্ন বুনেছিল সারা রাত..।
আহেলিরও কি একই অবস্থা ছিল ?
পরে আর জিজ্ঞাসা করা হয়ে ওঠেনি ...।
সকাল ৫টায় উঠে যখন স্নান করে কেত মেরে রেডি হচ্ছিল , 
মা রীতিমতো অবাক হয়েছিল , 
"কিরে এত সকাল সকাল কোথায় যাচ্ছিস?" 
সুস্মিত এক খুশি খুশি সলজ্জ excuse দিয়েছিল,"মা আজ Communication skill এর উপর একটা সেমিনার আছে, তাই তাড়াতাড়ি যেতে হবে ..৭.৩০ টার ট্রেন টা ধরব !"... 
আগে আগে ৭.৩০টা তেই আহেলিদের স্টেশন এ পৌঁছে গেছিল সে , খুব excited আজ , সময় যেন কাটছেনা আজ , সে ২ নাম্বার প্লাটফর্মের একটা বেঞ্চে বসে অপেক্ষা করতে লাগল। 
বুকটা দুরুদুরু .. বারবার ফোন চেক করছে.. যদি ও কোনো msg করে .. আনমনে পা টা নাচাতে লাগল ..। 
উফঃ! কখন যে আসবে , ঘড়িটা মাঝেমাঝেই দেখতে লাগল, আহেলি বলেছিল , ১নম্বর প্লাটফর্ম থেকে আসবে , বারবার সেদিকে তাকিয়ে ভিড়ে কোঁকড়া চুলের অলিভ কালার এর কুর্তিপরা মেয়েটাকে খুঁজতে লাগলো..
"কাল কি রঙের ড্রেস পরবি ?... 
-ওই তো অলিভ কালারের একটা কুর্তি ..তুই?
-নীল রঙের একটা শার্ট আর জিন্স...।
সামনে থেকে একের পর এক ট্রেন বেরিয়ে চলে যাচ্ছিল ..উফঃ! আর সইছেনা ! 
ঘড়িতে দেখলো , ৭.৫৫!!..আর কখন আসবে ? 
উত্তেজনার বসে একটা টেক্সটই করে দিল সে "তুই কোথায় ? 
কখন থেকে বসে আছি.. কখন আসবি?"... 
হঠাৎ ১নম্বর প্লাটফর্ম এ চোখে পড়ল , একটি মিষ্টি দেখতে মেয়ে, লক্ষী ঠাকুরের মতো কোঁকড়া কোঁকড়া চুল, অলিভ কালারের কুর্তি, জিন্স ..চোখে রিমলেস চশমা...। 
ততক্ষনে..
সুস্মিত এর বুকের ভিতর এ হৃদস্পন্দন ঢাক বাজাতে শুরু করেছিল...।
আহেলি সুস্মিত কে দেখে ১নম্বর স্টেশন এ দাঁড়িয়েই মিষ্টি করে হেসেছিল ....।
Waiting Girl on Station - Bhalobasar Golpo

নাহ! সেই মিষ্টি হাসিটা আজ বড্ড মনে পড়ছে !!! ..
..
সকালে যখন ঘুম ভাঙলো তখন ৮টা..।
কাল স্মৃতি রোমন্থনের ঘূর্ণিপাকে কখন যে চোখ টা বুজে এসেছিল ,খেয়াল নেই সুস্মিত এর। 
না আজ কলেজ যাবেনা সে ..।
 আজ দিন টাতে একটা পুরোনো ভালোলাগার গন্ধ আছে , কেমন একটা খুশির চিনচিনে ব্যাথা আছে। 
সময়গুলো উদ্বিগ্ন হয়ে কাটতে লাগল .. কিছুইতেই যেন মন বসছেনা। 
মনে মনে এক অদ্ভুত উত্তেজনা, অস্থির, একটু ব্যাথা .. আগের মতোই মাঝে মাঝে মোবাইল টা চেক করছে .. যদি আহেলি কোনো msg করে ..। 
না ! 
করেনি ..।
সইছে না নিস্তব্ধতা..।
ইচ্ছে করছে খুব কথা বলতে আবার.. কিন্তু না! 
ওই বা কেন আগে থেকে msg করবে..?? 
তার অভিমানগুলো জেগে উঠলো..।
এলোপাথাড়ি চিন্তাগুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ..শেষে Ego এর কাছে ইচ্ছেরই জয় হলো , সদ্বিগ্ন চোখে Type করল , " তুই আজ আসবি তো ?"... 
অপেক্ষার অনেকটা সময় পর ফোনটার নোটিফিকেশন রিংটোন টা বেজে উঠল , সুস্মিত তৎক্ষণাৎ হাতে নিয়ে দেখলো , 
"হ্যা! আমি আসব! 
ল্যাব এ ছিলাম, আমি ২.০৫ এর ট্রেন টা ধরব, তুই প্লাটফর্মে দাড়াস! ৩টের মধ্যে পৌঁছে যাব"...।
..
তাড়াতাড়ি স্নান টা সেরে ফেলল সুস্মিত, খাওয়া-দাওয়া টা কোনোমতে সেরে , নীল শার্ট আর জিন্স টা পরল। 
আজ দেখুক আহেলি আবার নীল শার্টটায় .. যদি ওর আগের কথা কিছু মনে পড়ে ..। 
বেশ পরিপাটি হয়ে স্টেশনের পথে রওনা হল সুস্মিত। 
মনে যেন সেই প্রথম দিনকার মতো উত্তেজনা, কৌতুহল, আবেগ...।
স্টেশন ২০ মিনিট এর রাস্তা । 
অনেক আগেই চলে এসছে সে ।
স্টেশন টা খুব চেনা চেনা লাগল আজ, স্মৃতির ফুলকি গুলো উস্কে দিচ্ছে যেন...।
ষ্টেশনের একটা বেঞ্চে ..বসে পড়ল সে।
বসে বসে সে উদাসীন চোখে .. স্টেশন এর ভিড় , লোকজন , রোজকার একঘেয়ে ক্লান্ত ট্রেনগুলি দেখতে লাগল..।
এরকম সময়েই ফিরতো আহেলি, সুস্মিত এভাবেই বসে থাকত চোখে একরাশ অপেক্ষা নিয়ে; তারপর অটো, মিলিনিয়াম পার্ক, গোধূলির শ্রান্ত-আলসে আলোতে ওর সুন্দর চোখে চোখ হারাত; ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে মনে করত সারা পৃথিবী টা কত সুন্দর।
হাতের মুঠোয় ওর নরম হাত যখন সুস্মিত এর চুল স্পর্শ করে বিলি কাটত , চোখ বুঝে আবেশে আহেলির বুকে নিজেকে সপে দিত সে .. "আর কি চাই জীবনে ?
শুধু তোকে চাই"
কিন্তু কেন সব পাল্টে গেল এক ঝটকায় ? 
দুনিয়াটাই পাল্টে গেল একদিনে ? 
কেন তার সবুজ সাজানো পৃথিবী টা একদিনে শুকিয়ে,চৌচির হয়ে ভয়ংকর খরায় পরিণত হল ?
 চোখের কোনে যখন চোখের জলের একটা কণা অনুভব করল , হঠাৎ ট্রেনের announcement এ ঘোর কাটল সুস্মিতের।
ঘড়িটায় চোখ বুলিয়ে দেখলো ২.৫২ , ট্রেন টা ঢুকছে ।
হ্যা! এই ট্রেনেই তো আসার কথা আহেলির ....।

বিরাট হুঙ্কার দিয়ে যখন ট্রেনটা স্টেশন এ ঢুকল , সুস্মিতের মনের ভিতরের  সাইরেনটা যেন প্রচন্ড শব্দে কানে বিঁধল ..।
বুকের ভিতর উথালপাতাল ..।
সে এদিক ওদিকে তাকাতে লাগল।
অন্বেষী চোখ খুঁজে বেড়াতে লাগল পরিচিত এক মুখ কে।
অবশেষে চোখে পড়ল কোকড়া চুলের মেয়েটিকে।
সাদা রঙের কুর্তি , জিন্স .. সেই রিমলেস চশমা ..।
সে সুস্মিত কে দেখে আবার মিষ্টি করে হাসল ..।
আজকের হাসিটা  বুকে গেথে গেল তীরের মতো ।
এই হাসিই তার আনন্দ-বিহলতার কারন হয়েছিল।
কতদিন সে অপেক্ষা করেছে এই হাসিটা দেখার জন্যে ।
না! 
আর ফিরে যেতে দেবে না এই হাসিকে। 
আজ কিছু একটা করতেই হবে।
ওকে ছাড়া যে জীবনটা কত দুর্বিষহ জানিয়ে দেবে আহেলি কে । .. না আর পারছেনা এভাবে রোজ আধমরার মতো ধুকে ধুকে বাঁচতে।
হঠাৎ স্তম্ভিত হয়ে গেল তার সমস্ত চিন্তা ভাবনা।
হতবাক হয়ে সে দেখল , হঠাৎ পিছন থেকে স্মার্ট দেখতে একটা ছেলে, কালো টি-শার্ট , মুখে ছাগলে দাড়ি, আহেলি কে সঙ্গ দিল , দুজনেরই মুখ টা একটু খুশি খুশি।
তারা দুজনেই এগিয়ে আসতে লাগল .. সুস্মিত এর দিকে । 
"কিরে কেমন আছিস ?
" স্বাভাবিকভাবেই এক পরিচিত মেয়েলি কণ্ঠ কর্ণকুহর এ ধাক্কা গেল সুস্মিত এর..।
"বেশ লাগছে তো তোকে... ,পুরো পাল্টে গেছিস দেখছি...."
সুস্মিত সামলে নিল নিজেকে .. মনের সমস্ত জাগ্রত চিন্তা ভাবনাগুলি দূরে ঠেলে , বেঁকে যাওয়া মেরুদণ্ড টা সোজা করে মুখে একরাশ হাসি নিয়ে বলল , "ভালোই রে .. তোর কিরকম চলছে ? 
আহেলিকে লক্ষ্য করল সুস্মিত ভালোভাবে। 
মুখে  হালকা হালকা ব্রণের দাগ হয়েছে, একটু সাস্থবতী হয়েছে , খুব ইচ্ছে করছিল , আগের মতো মাথায় হালকা চাটি মেরে জিজ্ঞেস করতে , "কিরে পাগলী! 
বাড়িতে রাক্ষসীর মতো খাচ্ছিস তাই না ?
মুখে শুষ্ক হাসি নিজের মনকে আটকে রাখল সুস্মিত।
"আমিও ভালো আছি রে , যাইহোক ও আমার একটা বন্ধু ,পরিচয় করিয়ে দি , ও  সায়ন , আমাদের ওখানেই পাশের পাড়ায় থাকে"। 
বুকটা ভারী হয়ে এল .. কৌতূহলে বুক ফেটে যাচ্ছে ..নিশ্চই এই ছেলেটা ওর নতুন বয়ফ্রেন্ড ।
কারো একজন মুখে শুনেছিল , যে "তোর ex কে তো একটা ছেলের সাথে দেখলুম!"।
 বিশ্বাস করেনি সেদিন .. তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় আহেলি একদিনেই তাকে ভুলে যেতে পারেনা ।
মুখে কাষ্ঠ হাসি এনে ছেলেটার সাথে হ্যান্ডশেক করল। 
তারপর আহেলি কে বললো , "চল ওদিকটায় দাড়াই, পরের ট্রেন টা ১৫ মিনিট পর, ততক্ষন তো থাক "।
আহেলি একটু ইতস্তত করে বলল "চল।" 
তারা সরে গিয়ে দাঁড়াল প্লাটফর্মে  এক ফলের দোকানের সামনে। 
সেই ফলওয়ালার মুখ টা আজ চেনা চেনা লাগল , মনে আছে , সেই মিলিনিয়াম পার্ক থেকে ফিরে এইখানেই দাঁড়িয়েই ট্রেনে তুলে দিত আহেলিকে।
যতক্ষন না চোখের সামনে থেকে ট্রেনটা আড়াল হত , ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত এখানে সে। 
ফলওয়ালার মুখের দিকে তাকালো, কেমন জানি অবাক অবাক লাগল তার।
"যাইহোক , যেটার জন্যে আসা , এই নে এটা ধর .. " আহেলি বলে ব্যাগ থেকে পলিথিন মোরা একটি বাক্স বের করে সুস্মিত এর হাতে ধরিয়ে দিল "। 
সুস্মিত এর বুকটা মুচড়ে উঠল , এত সহজে দিয়ে দিলি আমার শেষ স্মৃতিটুকু ?
কিন্তু মুখে সে সহজভাব এনে বলল , "হুম! থাঙ্কস! আর কেমন চলছে জীবন ..?" 
Girl Returning Gifts To Her EX Boyfriend - Bhalobashar Golpo

আহেলি স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিল .. ," একদম ভালো ছিলাম তা বলবো না , তবে সায়ন আসার পর থেকে বেশ ভালো আছি, একজন বন্ধুর দরকার ছিল ... .. আর তোর ? 
সুস্মিত এর হৎস্পন্দন বন্ধ হল । পৃথিবী টা শূন্য হল। 
সে উত্তর খুঁজে পেলনা বলে সায়ন এর দিকে তাকিয়ে হাসল, সেই ভুবন ভোলানো হাসি ... উফঃ! 
দেখতে দেখতে পরের ট্রেনের announcement টা হয়েছে ! 
ট্রেনটা শব্দ করে ঢুকছে,
আহেলি একটু কাছে এসে গভীর চোখে তাকিয়ে আবার বলল "কি রে বল " ... 
সুস্মিত ওর চোখটা আহেলির চোখ থেকে সরিয়ে বলল , " এই তো বেশ ভালো আছি রে। 
ওর কথা টা ট্রেন এর হুইসেল এর সাথে মিশে একাকার হয়ে কোথায় যেন হারাল...।
সেই আগের মতোই ট্রেন এ তুলে দিল ওদের .. ট্রেনটা চলতে শুরু করল ..আহেলি ট্রেনের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ..সুস্মিত এর  দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসল আবার..। 
কিন্তু ওর কালো গভীর চোখ টা কেমন ব্যাথাতুর লাগল ... আস্তে আস্তে আহেলি চোখের আড়াল হল।
শীতকাল, তার উপরে মেঘলা আকাশ, চারদিক টা বিকেল হতেই একটু অন্ধকার অন্ধকার ! 
চারদিকে হালকা কুয়াশার প্রলেপ কেমন রহস্যাবৃত পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।
তারই মাঝে শ্লথ-মন্থর গতিতে ট্রেনটা এগিয়ে যাচ্ছে তার গন্তব্যে।সেই আগের মতোই আজও সুস্মিত নির্বাক চোখে ছেড়ে যাওয়া আগুয়মান ট্রেনটার দিকেতাকিয়ে আছে।
একটুপরেই চোখের আড়াল হবে।
মিশে যাবে কুয়াশায়।
হারিয়ে যাবে কোথায়....।
ঝাপসা চোখে ট্রেনটির দিকে তাকিয়ে সুস্মিত দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল, "ভালো থাকিস"...।
লিখেছেন- অপূর্ব
বন্য ট্রল পেজ থেকে সংগৃহীত

অভাব

শুধু একটা কথা বলব,
ভালোবাসার মানুষটিকে প্লিজ অবহেলা করবেন না।

তোমাকে ভালোবেসে কেউ একজন প্রতিদিন বলে যাচ্ছে : কেমন আছো... কি করছো... খেয়েছো কিনা..!

এরকম ইত্যাদি কথাবার্তা বলে তোমার প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখছে... কেয়ার করছে। 
কিন্তু তুমি তার কোন কথাই মূল্য দিলে না, অবহেলা করে যাচ্ছো। 
শত ব্যস্ততার মাঝেও কেউ একজন তোমাকে এইভাবে খোঁজ রাখছে অথচ এতে তোমার কিছু যায় আসে না, অবহেলা করেই যাচ্ছো !!
.তোমার অবহেলা পেয়ে মানুষটা খুব কষ্ট পাবে,

রাতে কেঁদে চোখ লাল করবে, তবুও তোমার খোঁজ রাখছে প্রতিনিয়ত। 
তুমি হয়তো ভাববে বাহ, এতো কষ্ট দেওয়ার পরেও সে আমাকে ভোলেনি, না জানি আমাকে কতো ভালোবাসে। 
এই দূর্বলতা পেয়ে তুমি প্রতিনিয়ত অবহেলা করেই যাচ্ছো।
একদিন, দুইদিন, তিনদিন... চতুর্থ দিন সে তোমার খোঁজ রাখছে না। 
তোমার মোবাইলে, ফোনে, মেসেজে তার কোন সাঁড়াশব্দ নেই। 
তুমি হয়তো অবাক হয়ে যাবে ভাববে কি ব্যাপার আজকে তার কোন খবর নেই কেন ? 
তোমার মন খারাপ হয়ে যাবে... তুমি হয়তো একটু ব্যস্ত হয়ে পড়বে তার খবর নেয়ার জন্য !!
অবশেষে জানতে পারবে যে মানুষটা রাতের পর রাত তোমার জন্য কেঁদে চোখ লাল করে দিতো, সে এখন গভীর ঘুমে মগ্ন।

যে মানুষটা তার সবকিছু বাদ দিয়ে প্রতি মুহূর্তে তোমার খোঁজ রাখতো, সে এখন তার বন্ধুদের সাথে ফুল মাস্তিতে আছে।
যে মানুষটা তিনবেলা খাওয়ার আগে তুমি খেয়েছো কিনা জানতে চাইতো, সে এখন নিজে খেয়েই টুপ করে ঘুমিয়ে পড়ছে।
ঠিক সেই মুহূর্তেই তুমি তার অভাবটা বুঝতে পারবে।
তোমার প্রতি তার কেয়ারটুকুর মূল্যটা বুঝতে পারবে।
ঠিক তখনেই মনে হবে মানুষটা তোমার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো, তখন ইচ্ছা করবে তাকে ফিরিয়ে আনতে। 
মনে মনে খুব চাইবে সে যেন আগেরমত তোমার কেয়ার করে, কিন্তু তখন তুমি তাকে আর পাবে না, সে ফিরে আসবে না। 
কারণ, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে, তুমি অনেক দেরি করে ফেলেছো!!

কিছু ভুল শোধরানো যায়না

কিছু লিখবনা ফালতু কথা।
গল্প পড়ুন,...
Boyfriend and Girlfriend with Guiter
Boyfriend and Girlfriend with Guiter

আমি আর আগের মতো অবাক হই না।
অবাক হতে পারি না।
হয়তো অবাক হওয়ার ক্ষমতা টা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
মানুষ কারনে অকারনে অবাক হয়।
মানুষ হওয়ার সুবাধে আমার অবাক হওয়ার প্রয়োজন ছিলো।
কারন ইন্টার্ভিউ দিতে গিয়ে আমার প্রাক্তন প্রেমিকার সাথে অনেকদিন পর দেখা হয়ে গিয়েছে।
সে কিন্তু আমার মতো ইন্টার্ভিউ দিতে আসে নি।
সে স্বয়ং একজন ইন্টার্ভিউয়ার।
এই কারনে আমার অবাক হওয়ার দরকার ছিলো।
কিন্তু আমি এখন কোনকিছুতে অবাক হওয়ার আগে জিনিসটা ব্যাখ্যা করি।
ব্যাখ্যা করতে ব্যার্থ হলেও অবাক হই না।
সবকিছুরই একটা ব্যাখ্যা আছে।
এখন না পারি পরে হয়তো এর ব্যাখ্যা অবশ্যই পেয়ে যাবো।
নীরা আমার প্রাক্তন প্রেমিকার নাম।
এখন তো প্রাক্তন কেউ বলে না।
ইংরেজি শব্দ ব্যাবহার করে, এক্স গালফ্রেন্ড।
যাকে আজ ইন্টার্ভিউ রুমে দেখলাম।
কিন্তু সে আমার মতো না। সে অনেক অবাক হয়েছে।
তার অবাক হওয়া দৃষ্টি আমি দেখেছি।
তার অবাক হওয়ার অনেক কারন আছে।
এর প্রধান কারন হতে পারে আমি এখন ও চাকরির জন্য ঘুরছি যা হওয়ার কথা না।
আমি ক্যারিয়ারের ভালোর জন্য, একটা ভালো ভবিষ্যৎ এর জন্য তার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করেছি।
বর্তমানে যাকে বলে ব্রেক-আপ। সবচেয়ে বহুল ব্যাবহ্রত শব্দ।
কারনে অকারনে এই শব্দের প্রয়োগ হয়।
সবাই যখন বিভিন্ন সাধারন প্রশ্ন করছে চাকরির বিষয়ে আমার সম্পর্কে। 
তখন নীরা করলো অদ্ভুদ এক প্রশ্ন। যা এখানে মানায় না।
সে বললো,'মি. সাহেব আপনি কি কোন রিলেশনে আছেন বর্তমানে?' আমি অবাক হলাম।
মনে হলো পৃথিবীর সবচেয়ে অবাক করা প্রশ্ন এটি যা আমার অবাক হওয়ার গুন ফিরিয়ে এনেছে।
অবাক হওয়ার ভঙ্গি না করে উত্তর দিলাম,'না'
নীরার সাথে সম্পর্কের সময় এর চেয়ে আরো বেশি অবাক করা কথা বলতো।
তার সাথে আমার সম্পর্কের শুরু ইউনিভার্সিটির সময় থেকে।
আমি তখন ৩য় বর্ষ আর সে নতুন।
তাকে প্রথম দেখি আমার বন্ধুর সাথে।
আমার বন্ধুর দূরসম্পর্কের বোন হয় নীরা।
আমরা বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন। 
আমি গিটার আর অন্য সবাই গান গাইছিলো।
গিটার বাজানোর শখ আমার স্কুল জীবন থেকে ছিলো।
কিছু শখ সময়ের সাথে সাথে মিটে যায়।
আমারো তাই হলো।
অনেকদিন হলো গিটারের তারগুলোতে হাত বুলায় না!!!
নীরা কে আমাদের সবার সাথে পরিচয় করালো আমার বন্ধুটি।আমাদের ভার্সিটিতে সে নতুন ভর্তি হয়েছে।
প্রথমদিন তেমন রুপবতী মনে হয়নি নীরাকে আমার কাছে।
যদিও আমি তেমন ভাবে দেখিনি।
মেয়েদের দিকে তেমন তাকাতামও না।
চোখে চোখ পড়লেই ভয় লাগতো। বুক ধড়ফড় করতো।
যার কারনে সব বন্ধুরা যখন ইন আ রিলেশনশিপ আমি তখন সিংগেল।
নীরার সাথে যখন পরেরবার দেখা হলো।
মনে হলো পৃথিবীর সবচেয়ে রুপবতী মেয়ে নীরা।
চোখে কাজল দেওয়ার কারনে হয়তো চেহারা টা আরো সুন্দর দেখাচ্ছিল। 
তখন মনে হলো এই কারনেই হয়তো আমি সিংগেল ছিলাম।
প্রেম মনে হয় নীরার কারনেই করা হয়নি।
Baby Boy and Girl with Flower

আমার প্রেম জীবনের অভিষেক হয়তো নীরার মাধ্যমেই হবে।
তাকে নিয়ে গেলাম ক্যাম্পাস টা ঘুরে দেখাবার জন্য।
তার চোখের দিকে তাকিয়ে ক্যাম্পাস সম্পর্কে বর্ণনা দিতে লাগলাম।যা আগে কোন মেয়ের সাথে করা হয় নি।
তার পরিবার ও তার নিজের সম্পর্কে কিছু জেনে নিলাম।
আমার নিজের সম্বন্ধেও কিছু পজিটিভ কথা বললাম কারন
আমার এখন মেইন টার্গেট নীরার সাথে প্রেম করবো তা না হলে জীবনের ষোল আনায় বৃথা হয়ে যাবে বলে মনে হয়েছিলো।
আমার ফোন নাম্বার টা সে নিজে থেকে নিয়ে আমার মোবাইলে কল
করল যাতে আমি ওর নাম্বার টা পাই।
এর পরে কিভাবে যেন আমাদের সম্পর্ক টা হয়ে গেলো।
যতো কঠিন ভেবেছিলাম তত কঠিন লাগে নি।
আমার বন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম নীরা সিংগেল কিনা?
কিন্তু সে এমন ভঙ্গি করে আমার দিকে তাকিয়েছিলো যেন সব বুঝে গেছে আর কিছু বলতে হবে না।
পরেরদিন ঘটলো অবাক করা ঘটনা।
সে আমাকে সবার আলাদা নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো, 'আপনি নাকি আমাকে পছন্দ করেন' আমার দিকে তাকিয়ে উত্তরের জন্য অপেক্ষা করলো।
'কে বললো এ কথা?' কারন আমি এ কথাটির জন্য অপ্রস্তুত ছিলাম।
'তার মানে পছন্দ করেন না'
'মানে!' আমতা আমতা করতে লাগলাম। 
'পছন্দ না করলে আমাকে অন্য একটি নাম্বার দিয়ে কল দিয়ে কথা বলেন না কেন? 
আমার ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে আবার ক্যান্সেল করে দেন কেন? 
নিলয় ভায়ের কাছ থেকে আমার খোজ নেন কেন।
আমি সিংগেল আছি কিনা জিজ্ঞেস করলেন কেনো?' 
এতো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তাই আসল কথাটা বলেই ফেললাম।
মনে হচ্ছিল দেরি করা ঠিক হবে না।'
আমি তোমাকে পছন্দ করি। আমি তোমাকে ভালোবাসি।'
সেই থেকে অনেক দিন আমাদের সম্পর্ক চললো।
ফোন কোম্পানিকে বড়লোক করার পদ্ধতি টা আমাদের গ্রহন করা শুরু হয়েছিল।
রাতের পর রাত শুধু ফোনালাপ।
নীরার সাথে আমার যেদিন শেষ কথা ও দেখা হয়েছিলো। 
সেদিন তার আংগুলে আমার দেওয়া আংটি টি দেখতে পাই নি।
সেদিন আমি তাকে ফোন করে বলেছিলাম তাকে একটা জরুরী কথা বলবো।
সেও বলেছিলো তার একটা জরুরী কথা আছে। 
আমার মনে হয়েছিলো তার জরুরী কথা টা এমন হবে যার কারনে আমি তার মায়া ছাড়তে পারবো না।
মায়া ছাড়াতে এসেছি, এখন আবার মায়ায় পড়ে গেলে হবে না।
তাই আমি কথাটা আগে বলতে চাইছিলাম। 
কিন্তু নীরা আমাকে বাধা দিয়ে সে আগে বলতে চেয়েছিলো। 
তখন বুঝি নি কেনো সে তার জরুরী কথা টা আগে বলতে চেয়েছিলো? 
পরে বুঝেছিলাম, কারন সেও আজকে মায়ার বাধন ছিঁড়তে এসেছিলো ছড়াতে নয়!
নীরা কিছু বলতে যাবে সে মুহূর্তে আমি বলে দিলাম' আমি তোমার সাথে আর থাকতে চায় না। আমি আমার ক্যারিয়ারের দিকে মন দিতে
চাই।'
নীরা চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো।
'আমি তোমার সাথে সম্পর্ক চালাতে গিয়ে নিজের লাইফটাকে ভালো করে চালাতে পারছি না।'
নীরা আমার দেওয়া আংটিটা দিয়ে বললো' আমি ও তাই চাইছিলাম।এজন্যই এসেছি। আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে'
সেদিনের পর আজ তাকে ইন্টার্ভিউ রুমে দেখলাম।
আমার তিন বছরের জুনিয়র হয়েও আমার আগে চাকরি করছে এ নিয়ে আমি অবাক হয়নি। কারন এর একটি  ব্যাখ্যা দাড় করিয়েছি।
নীরার সাথে সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর তার দাদা মানে আমার বন্ধু নিলয়ের কাছ থেকে শুনতে পাই যে নীরার বিয়ে হয়েছে বিরাট ধনী এক লোকের সাথে। মাথায় চুল নেই। 
টাক হওয়ার কারনে সবসময় চুল শেভ করে রাখে।
ইন্টার্ভিউ রুমেও আজকে এরকম একটা লোককে দেখতে পেয়েছি।হতে পারে এটাই নীরার স্বামী। 
আর নীরা এখানে নিজের স্বামীর কোম্পানিতে বড় কোন পদে চাকরী করে। .
আরেকটা নতুন বায়োডাটা অন্য কোম্পানিতে পাঠাবো বলে ভাবছিলাম। 
পত্রিকায় একটা চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখতে পেয়েছি।
কারন আমি নিশ্চিত ছিলাম নীরার কোম্পানিতে আমার
চাকরি হয়ে যাবে। 
তার ভুল বা আমার ভুল যার ভুলের কারনেই আমাদের সম্পর্ক ভাঙুক না কেন। নীরা তার স্বভাব মতো দয়ালু হবে।
আমার যোগ্যতা থাকুক আর না থাকুক এই চাকরিটা আমার হওয়ার পিছনে তার বিশাল অবদান থাকবে।
আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হয় নি। 
নীরার কোম্পানি থেকে আমাকে জয়েন করার জন্য বলা হয়েছে সকালে আমার নামে দুটি চিঠি এসেছে।
জয়েন করার আগে কোম্পানির এমডির সাথে দেখা করার জন্য আলাদা আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আমি নিশ্চিত এইটা নীরার কাজ।
নীরার কাজ সফল হক আমি তা চাইছি না এই মুহূর্তে। 
তাই চিঠি আর এপয়েনমেন্ট লেটার টা ছিড়ে ফেলে দিলাম আর চাকরির সংবাদ ফিচারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি খুজতে লাগলাম।

সে তো বুঝলোনা

ভালোবাসা যে কি তা কেউ বলে বোঝাতে পারে না।
মন দিয়ে সবাই আবার সেটা বুঝতে পারে!
Love Love Love - Valobasa

বার বার রাগ করে তোমার সাথে কথা বলা থামিয়ে দিই...
আবার বার বার ফিরে আসি তোমার কাছে।
কিন্তু আমার বারবার এই ফিরে আসার পিছনে একটা কারন রয়েছে, 
আর কারনটা হল আমি তোমাকে কখনো হারাতে চাই না। 
জানি তুমি একজন কে খুব ভালোবাসো। 
আর হয়ত সে সব দিক থেকেই আমার চেয়ে ভালো......।
তাছাড়া আমিও চাই যে, তুমি যেন তাকে পেয়ে অনেক অনেক ভালো থাকো।
তাই আমিও আর কখনো আমার ভালো লাগার কথা তোমাকে বলিনি, কারন আমার ভয় হয় যদি তুমি আমাকে উওরে ''না, বলে আমাদের বন্ধুত্বটাও ভেঙে দাও! 
তাহলে আমি কি করে থাকব.....!!! 
আর তুমিও এই স্বার্থপর দুনিয়ার এমন এক স্বার্থপর মানুষ যে সবসময় তোমার নিজের কথাই ভেবেছ।
তোমার সাথে আমার কাটানো এতটা সময়, এত কথায়ও কখনো আমার মনের কথা বুঝতে পারলে না!!! 
I will not miss you - valobasa

ভালোবাসা আমাকে মানায় না

সব লেখা তো আর সবার ভালো লাগেনা।
এটা আপনার কাছে খারাপ লাগলো বাট অন্য কারোর কাছে ভালোও লাগতে পারে,
তাই খারাপ ভালো সবই পোস্ট করতে হয়, আজকের টা শুরু করি।
Sad Girl Tears - Valobasa
- হ্যালো! ভালো আছো?
- তোমাকে না বলেছি আমাকে আর ফোন করবেনা।
- কেন এমন করছ আমার সাথে? ফোনের অপর প্রান্তে কাঁদো কাঁদো স্বর দিপ্তীর। আমি কি করেছি?
- আমি তো তোমাকে বলেছি, আমি অন্য একটা মেয়ের সাথে রিলেশনে আছি, কথা কি মাথায় ঢোকেনা তোমার?
- তাহলে আমার কি হবে? আমার সাথে কেন ব্রেক-আপ করলে?
- তোমাকে এখন আর আমার ভালো লাগেনা।
-আমি বিশ্বাস করিনা।
এমন সময় হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যাথায় চোখে অন্ধকার দেখতে থাকে সাগর, ফোন কেটে দিয়ে পেটে হাত দিয়ে চেপে ধরে ছটফট করতে থাকে।
সময় জ্ঞান হারিয়ে যায় মনে হতে থাকে যেন অনন্ত কাল ধরে এই মাথা ব্যাথা হয়েই যাচ্ছে।
যেভাবে আচমকা ব্যাথা টা এসেছিলো ঠিক সেভাবেই চলে যায় হঠাৎ করে।
সাগর ঘড়ির দিকে তাকায় প্রায় টানা তিন ঘণ্টা ধরে ছটফট করেছে সে।
ওষুধ খাবার সময় হয়ে এলো, এখনি আবার ডাক্তার আঙ্কেল আসবেন দেখে যাওয়ার জন্য।
সাগর জানে তার হাতে আর বেশীদিন সময় নেই, কিডনিটা দিন দিন খুব খারাপ হচ্ছে ধীরে ধীরে।
- দাদা ওষুধ খেয়েছিস?
- ওষুধ খেয়ে কি হবে বোন? সাগর মলিন স্বরে হেসে ওঠে।
- ছোট বোনটা থমকে দাঁড়ায়, কান্না আটকে রাখার আপ্রান চেষ্টা করেও আর না পেরে বের হয়ে যায় রুম থেকে।
সাগর বুঝতে পারে কাজটা ভালো হয়নি।
সে ওষুধ খেয়ে, বোনের কাছে গিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরে, বোন তার মাথায় হাত বুলাতে থাকে আর সাগর চুপ করে বোনের  কোলে মাথা দিয়ে বসে থাকে।
এমন সময় সাগরের ফোনে মেসেজ আসে একটা, স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে দিপ্তীর মেসেজ।
“আই হেট ইউ” - তোমার সাথে আর কখনো যোগাযোগ করবোনা আমি। আমার ভাবতেই ঘৃণা হচ্ছে যে আমি তোমার মত ছেলে কে ভালোবেসে ছিলাম।

সাগরের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে থাকে,
সে ফিস ফিস করে বলে, “আমাকে ঘৃণা করে তুমি সুখে থাকো দিপ্তী।
অন্য কাউকে ভালবেসো তুমি।
তুমি তো জাননা ভালোবাসা আমাকে আর মানায় না।”

মধ্যবিত্ত ছেলেমেয়ের ভালোবাসা

মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের ভালোবাসা!
সে একদম অন্য রকম ভাবে হয়, তাহলে একটা গল্প শোনানো যাক মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের ভালোবাসা সম্পর্কে।
Boy In Rain - Valobasa
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেগুলা হুট করে কোন মেয়েকে বলতে পারেনা ভালোবাসি।
কারন ওরা নিজেদের নিয়ে একধরনের হীনমন্যতায় ভোগে।
ওদের মনে সবসময় একটা ভীতি কাজ করে, ওর সামাজিক অবস্থান জানার পর মেয়েটি যদি ওকে ফিরিয়ে দেয়।
মেয়েটা যদি ছেলেটার প্রস্তাবে সাড়া দেয় তবুও দুশ্চিন্তার শেষ নেই!
একটা সম্পর্কে জড়ানোর চেয়ে সে সম্পর্কটা টেনে নেয়ার কাজটা বরং বেশি কঠিন।
মেয়েটার সাথে নিয়মিত ফোনে কথা বলা। কোন উতসবে দুজনে মিলে ঘুরতে বের হওয়া।ভালো কোথাও খেতে যাওয়া কিংবা জন্মদিনে টুকটাক কিছু গিফট করার কথা মাথায় আসলে চোখেমুখে অন্ধকার দেখে ছেলেটা। 
এই চিন্তা থেকে অনেক ছেলেই কোন মেয়েকে তার ভালোবাসার কথা কোনদিন মুখ ফুটে বলতে পারেনা। 
এ সবকিছুর পরও অনেক ছেলে সাহস করে মেয়েটাকে ভালোবাসি বলে ফেলে।
মেয়েটাও একসময় ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই রাজি হয়ে যায়। 
ছেলেটা তখন থেকে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে। 
স্বপ্ন দেখে খুব অল্প সময়ের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে মেয়েটাকে বিয়ে করে সুখের সংসার বুনবে।
মেয়েটা কলেজের সেকেন্ড কিংবা থার্ড ইয়ারে উঠতেই বাড়ীতে বিয়ের প্রস্তাবের হিড়িক পড়ে যায়।
মেয়েটা গভীর রাতে দিশেহারার মত ছেলেটাকে ফোন করে অসহায়ের মত চোখের জল ফেলে আর ছেলেটা পাথরের মূর্তির মত মন দিয়ে সব কথা শোনে এবং দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
আর মধ্যবিত্ত হয়ে জন্ম নেয়ার জন্য মনে মনে নিজেকে অভিশাপ দেয়।
একসময় ওরা দুজন নিয়তিকে মেনে নেয়। 
ওরা কেউ কাউকে দোষ দেয়না।
যেন ওদের ভাগ্যে এমনটাই হবার কথা ছিল।
সারাজীবন হয়ত একটা অপূর্নতা বয়ে বেড়াতে হবে এটাই যা আফসোস। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের সবচেয়ে বড় গুন ওরা অনানুষিক কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়।
যেদিন বাড়িতে ছেলেপক্ষ মেয়েটাকে দেখতে আসে মেয়েটা তখন বুকে পাথর রেখে শাড়ি পরে মাথা নিচু করে ওদের সামনে গিয়ে বসে।
মেয়েটার বুকের মাঝে যে রক্তক্ষরন হয় সেটা কেউ টের পায়না। 
একসময় মেয়েটার বিয়েও হয়ে যায়।
আবার চলতে থাকে কম্প্রোমাইজ, মেনে নেওয়ার খেলা।
থেমে থাকে না কিছুই.., মধ্যবিত্ত মানুষদের থামতে নেই।

হারবেন কেন, আপনি জিতবেন

আমার ৩ টে বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল।
বেস্ট ফ্রেন্ড আবার ৩ টে হয় কিকরে ভাবছেন?
বাট আমার ৩ টে, পাগোল ভাবলে ভাবেন বাট আমার তিনটে-ই।
কিন্তু একজন আর নেই, নিজের ইচ্ছাতেই চলে গিয়েছে।
 অনেক দূরে। যেখান থেকে আর ফেরা যায়না।
আজকের লেখা তাদের জন্য যারা নিজেকে ব্যর্থ ভাবে, ভাবে সে হেরে গ্যাছে। তাহলে শুরু করি আজকের হার জিতের গল্প।
Black Indian Beauty Girl -Valobasa

মেয়েটা যখন ক্লাস এইটে পড়ে তখন একটা ছেলেকে প্রোপজ করেছিল। মনে মনে তাকে সে খুব ভালোবাসতো।
মেয়েটা বর্ণে কালো হওয়ার কারণে ঐ ছেলেটা তাকে রিজেক্ট করে দেয়।
মেয়েদের বুক ফাঁটে তবু মুখ ফোটে না।
কিন্তু মেয়েটির মুখ ফুটেছিল বলেই হয়তো এই লজ্জার স্বীকার হতে হয়েছে।
মেয়েটা কিছুতেই এই বিষয়টা মানতে পারছিল না।
নিজেকে সামলে রাখতে খুব চেস্টা করত কিন্তু তবুও সারারাত কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাতো।
সব সময় মন খারাপ করে থাকতো।
শেষে মেয়েটা নিজের মধ্যে প্রচুর জেদ তৈরি করলো।
প্রচুর লেখা-পড়া শুরু করল কারণ তাকে যে অনেক বড় হতে হবে।
অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষায় জেলায় প্রথম হয়ে গেল।
বাবা-মা জোর করে বিদেশ ফেরত এক ছেলের সাথে মেয়েটার বিয়ে ঠিক করে ফেললো।
মেয়েটা যে কালো, আইবুড়ো হয়ে গেলে কেউ এই মেয়েকে বিয়ে করবে না। তাই ,বাবা-মা বিয়েটা ঠিক করলো।
কিন্তু মেয়েটা তার বাবা-মাকে ভয় দেখালো যে , বিয়ে দিলে সে গলায় দঁড়ি দেবে।
মেয়েটা মনে মনে বললো , সে যেদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবে ঠিক সেদিন-ই বিয়ে করবে।
যেই কথা সেই কাজ। জীবন যুদ্ধে নেমে গেল।
নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে গেল। ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়িয়ে নিজের লেখা -পড়ার খরচ চালাত।
বাড়ি থেকে টাকা চাইতো না।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ড স্ট্যান্ড করলো অঁজপাড়া গাঁয়ের একটা স্কুল থেকে।
এরপর মফস্বলের হাই স্কুল থেকে এইচ এস তেও বোর্ড স্ট্যান্ড।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশুনা শেষ করে ঐ কালো মেয়েটা এখন হাইকোর্টের জর্জ।
মেয়েটার ক'দিন আগেই বিয়ে হয়েছে। ছেলে একজন ডিসি।
যে ছেলেটা ঐ মেয়ের প্রোপোজ ফিরিয়ে দিয়েছিল সে এখন গার্মেন্টস-এ চাকরী করে।
আসলে , যারা মানুষকে ফিরিয়ে দেয় তারা কখনো বড় হতে পারে না।
যারা আঘাত পেয়ে ফিরে যায় তারাই যুগে যুগে বড় হয়।
জীবনে জেদ থাকলে অনেক উঁচুতে ওঠা যায়।
সবাই তো সুন্দরীদের পেছনেই ছোটে। সাদা- কালো আপেক্ষিক।
নিজের ভেতর প্রচুর জেদ তৈরি করুন।
যেখানে হোচট খাবেন , সেখান থেকেই উঠে দাঁড়ান। জীবনে ঝড় আসবেই। ব্যর্থতা থাকবেই।
জীবনে সবচেয়ে ভালো জায়গায় যেতে চাইলে জেদ করতে শিখুন।
আপনাকে ছাড়িয়ে যান। আপনার সাফল্য নিশ্চিত।

সব ভুলবোঝাবুঝি

Lonly Lovly Alone Sweer Girl -Valobasa

পাশাপাশি রিকশায় আমরা। 
এত আড়াল করার পরও চোখে চোখ পড়ে গেল। 
এত বছর পরেও বুকটা এমন ধুকধুক করে কেন! 
কথা বলবনা বলবনা করেও মুখ দিয়ে বের হয়ে গেল, কেমন আছ?
- ভালো। তুমি?
- ভালো। বাড়ি ফিরছ?
- হ্যা। তুমি?
- আমিও, এখানে নতুন এসেছ? আগে দেখিনি তো।
- দেখা দিতে চাইনি।
- আমিও তো। 
- ইস কি বিশ্রী জ্যাম!
- হ্যা। কখন যে একটু চলতে শুরু করবে!
- সেটাই। তোমার শ্বাসকষ্টের অসুখটা কমেছে?
- না ঐ এক রকমই আছে। তোমার মাইগ্রেইন?
- আগের চেয়ে কিছুটা কম। মনে আছে তোমার?
- হ্যা, হেসে বলি আমি। এরপর কোন কথা নেই কিছুক্ষন। জ্যামটাও ছাড়ছেনা।
- এখনও প্রতিদিন শাড়ি পর?
- তুমিইতো অভ্যাসটা করিয়েছিলে। আর ছাড়তে পারিনি।
- অভ্যাসটা ছাড়তে পারনি কিন্তু মানুষটাকে ঠিকই ছেড়ে গেলে।
- আহা ওসব থাক না প্লিজ।
- হ্যা থাক। আচ্ছা তোমার দিদি ভালো আছে?
- দিদি এখন নিজের বাড়িতে, বিয়ে হয়ে গ্যাছে। জ্যাম বুঝি ছাড়ল। যাই।
- যাও। শাড়ির আঁচলটা গুটিয়ে নাও রিকশার চাকায় আটকাবে।
- তুমিও সানগ্লাস টা পর। রোদে মাথাব্যথা করবে।
- এই শোন, ভালো থেক।
- তুমিও ভালো থেক । রাত জাগার বিশ্রী অভ্যাসটা বাদ দিও। আর অনেক শুকিয়ে গেছ। নিজের যত্ন নিও। 

সামনের দিকে তাকালাম। আমার রিক্সা কিছুটা এগিয়ে গেছে। হলুদ শাড়ি পরা আমার চুল বাতাসে উড়ছে। শাড়িটা ওরই দেয়া ছিল। ও কি চিনতে পেরেছে? 
আজ ১৬-ই জানুয়ারি। এই দিনেই ওর সাথে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল। মনে কি আছে ওর? 
চুলগুলো বাঁধতে গিয়েও বাঁধলাম না। খোলা চুল ওর খুব প্রিয় ছিল। এত বছর পরে নিজেকেও বড্ড অচেনা লাগে। মানুষ কি সবসময় নিজেকে চিনতে পারে? চোখটা আজ বড় বিশ্বাসঘাতকতা শুরু করেছে।

স্বার্থপর ছেলে

আপনি নিজেও জানেন ও মানেন সব মেয়ে যেমন খারাপ বা হৃদয়হীনা হয় না, তেমন সব ছেলেরাও কিন্তু ধোয়া তুলশীপাতা নয়। অনেক ছেলেই কিন্তু চরম খারাপ।
আমি নিজেই একজন।
আমি হয়ত কারোর সাথে সেক্স করে ভিডিও ইন্টারনেটে দিতে পারব না, অতোটা খারাপ না।
কিন্তু অনেক ছেলেই যে এটা করছে তাতো প্রতিদিনই দেখছি।

Sad Girl Crying - Valobasa

ছেলেটা খুব ব্যাস্ত বিয়ের কেনাকাটা নিয়ে। 
মেয়েটার কোন ব্যস্ততা নেই। সে আকাশের দিকে তাকিয়ে মেঘ দ্যাখে, বৃষ্টি হলে দুহাত প্রসারিত করে বৃষ্টি ধরে। তারপর সেই বৃষ্টিস্নাত হাতটা মুখে মাখে, নদীর ধারে যায়, নদী দ্যাখে। 
ছেলেটা মহাব্যস্ত জেনেও মেয়েটা ফোন করে। 
ফোন করে ভাবে, ব্যস্ত ছেলেটা কী ফোন ধরবে? ওমা! ধরলোতো।
রিসিভ করলে মেয়েটা বলল, একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
- কী কথা? 
- কী করছো? 
- বিয়ের কেনাকাটা। 
- শাড়ি? 
- শাড়ি, সাথে আরও সব। 
- কার? 
- কার আবার! ঘরে যে নতুন আসবে তার। 
- আর? 
- উফ! বললামতো সব। 
- বিরক্ত হচ্ছো? 
- না। 
- উফ! বললে কেন? 
- উফ! ঠিক আছে আর বলবোনা। তোমার গুরুত্বপূর্ণ কথাটা বলো। 
- আমি জানি বিয়েটা মেয়েটার বাড়িতে হচ্ছেনা। 
- তো? কোথায় হচ্ছে জানতে চাও? 
- না না। খবরদার আমাকে বলবেনা। 
- কেন? 
- আমি যদি বিয়ের সময় হাজির হয়ে যাই! যদি ওখানে গিয়ে পাগলামী করি? যদি তোমাকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া করি?
- তুমি করবেনা আমি জানি। 
- না না। আমিতো পাগলি। পাগলিরা কখন কী করে তা তারা নিজেরাও জানেনা। 
- এটাই তোমার গুরুত্বপূর্ণ কথা? 
- না। 
- তো? 
- আজকের পর আমি যদি তোমাকে ফোন করি তাহলে তুমি রিসিভ করবেনা। 
- আচ্ছা। 
- শোনোনা, আমি কিন্তু বারবার ফোন করব। আমার নিজের ভেতর কোন কন্ট্রোল থাকবেনা। কিন্তু তুমি ফোন রিসিভ করবেনা। আমি কিন্তু শত শত ম্যাসেজ করবো, তুমি ম্যাসেজগুলো ওপেন করবেনা। কারন ম্যাসেজ পড়ে তুমি ইমোশনাল হয়ে যেতে পারো। তোমার মন খারাপ হয়ে যেতে পারে। 
- গুরুত্বপূর্ণ কথা শেষ? 
- না। আরো আছে। 
- বলো। 
- বিয়ের আগের দিন তুমি সিম চেইঞ্জ করে নিও, ঠিক আছে? 
- কেন? 
আমারতো মাথা ঠিক থাকবেনা। আমি বারবার ফোন করবো। এরচেয়ে তোমার নাম্বার বন্ধ পেলে সেটাই ভাল। আর হ্যাঁ আমি বারবার ফোন করাতে যদি তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করে কে ফোন করছে, তুমি বলবা আননোন নাম্বার, বখাটে ছেলে ডিস্টার্ব করছে। 
- হু। 
- আর শোনোনো। 
বলো। 
- তুমি নাম্বার চেঞ্জ করলেও কিন্তু আমি নাম্বার খোঁজার চেষ্টা করবো। তোমার যে বন্ধুদের আমি চিনি তাদের কাছে তোমার নতুন নাম্বার দিওনা। আর দিলে ওদের বলে দিও ওরা যেন আমাকে তোমার কোন ইনফরমেশন না দেয়। 
- হু। 
আর একটা কথা। কেউ কেউ তোমার কাছে বলতে পারে আমি ভালো নেই বা অসুস্থ হয়ে গেছি। তুমি কিন্তু এটা ভেবে মন খারাপ করবেনা। আমি কিন্তু ভালোই থাকবো। আর অসুস্থ বা মন খারাপ হলেইবা কী! বাবা-মা মরে গেলেও তো মানুষ বেশিদিন খারাপ থাকেনা, তাইনা? আমি হয়তো কয়েকদিন মুখ ভার করে থেকে তারপর দিব্যি সুস্থ হয়ে যাবো। তুমি একদম চিন্তা করবেনা। ঠিক আছে? 
মেয়েটা আর কথা বলতে পারেনা। সে ফোন কেটে দেয়। তার দু-চোখ বেয়ে অঝোরে জল পড়তে থাকে। 
Sad Sick Girl - Valobasa

মেয়েটা আবার ফোন করে। 
ছেলেটা রিসিভ করেনা। 
মেয়েটা আবারো ফোন করে।
ছেলেটা কস্ট পায় কিন্তু রিসিভ করেনা। 
মেয়েটা ম্যাসেজ পাঠাই, প্লিজ, একবার রিসিভ করো, প্লিজ...।
ছেলেটা ম্যাসেজ খোলার সাহস পায়না। সে জানে ঐ ম্যাসেজের মধ্যে কী লেখা আছে! 
মেয়েটা আবার ফোন করে। 
ছেলেটা ফোন কেটে দিয়ে ফোনটা অফ করে। 
শপিংয়ের তালিকায় যুক্ত করে, নতুন সিম!।