কতোটা ভালোবাসো

কতোটা ভালোবাসো


 দীপান্বিতা-- কতোটা ভালোবাসো বলো দেখি!

তন্ময়-- তোমাকে ভালোবাসার দুঃসাহস আমার নেই। তবে তুমি চাইলে, কোনো এক শীতের রাতে হাতে হাত রেখে হলুদ আলোর ছাওয়ায় অনেকটা পথ হেঁটে যেতে পারি।

দীপান্বিতা-- আর কী পারো?

তন্ময়-- বসন্তের বিকেলে সবুজ পাতার অলংকার গড়ে দিতে পারি। শাড়ির আঁচলটা কাঁধ থেকে নামলে, ঠিক করে দিতে পারি।

দীপান্বিতা-- আর?

তন্ময়-- মাঝরাতে ঘুম ভেঙে বাইরের বারান্দায় তুমি এসে দাঁড়ালে, তোমার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পাড়ি।

দীপান্বিতা-- কিন্তু, মাঝরাতে ঘুম ভাঙবে কেন? 

তন্ময়-- সবটা কী আর মানুষের নিজের হাতে থাকে গো দীপা! সবার কাছে নিজেকে আড়াল করতে গিয়ে, শেষ অবধি নিজেকেই নিজের কাছে আড়াল করে ফেলে। তখন তো নিজের শরীরটা অবধি নিজের কথায় চলে না।

দীপান্বিতা-- সে নাহয় তুমি ই ঘুম পাড়িয়ে দিলে।

তন্ময়-- সে পারি। তবে অভিমানে জেগে থাকা জরুরি। ঘুমিয়ে পড়লে ওরা লুকিয়ে পড়ে। পরে সময় মতো রাগ হয়ে বেরিয়ে আসে। আমার উপর রাগ করতে দেবো না তোমায়।

দীপান্বিতা-- কিন্তু এইটুকু তে জীবন চলে না, তা কি বোঝো? বাস্তব না চিনলে ভালোবাসা চলে শুনি। কিন্তু সংসার করা তো সহজ নয়।

তন্ময়-- তবে, আজ থেকে ভালোবাসার দ্বায়িত্ব আমি নিলেম। সংসার এর দ্বায়িত্ব তুমি ই নাও। তারপর সময় করে আমাকেও বাস্তব টুকু চিনিয়ে দিও না হয়।

অতিরিক্ত বাস্তব সচেতন দীপান্বিতার চোখেও নদীর টান আসে। বালির কোনে কোনে জল চিকচিক করে হলুদ আলোয়। তন্ময় ওর চোখ মুছিয়ে দেয়। বাস্তবের শক্ত মেয়েটা ভেজা গলায় বলে, " বাস্তব শিখে কাজ নেই। তুমি শুধু আমার বাস্তব হয়েই থেকো।"

দীপান্বিতা কে কাছে টেনে নিলে তন্ময়। হাতে হাত রাখলে শুনি সাহস বাড়ে। হলুদ আলোয় তন্ময়ের চোখে সাহস ভিড় করে আসে। দীপান্বিতা আজকে একটু ভীতু হয়েই ওর হাত শক্ত করে ধরে থাকে। আবেগ থাকলে কিছু কিছু সময় ভীতু হতেও ভালো লাগে। সাহসী হয়ে সবসময় আবেগ গুলোকে দূরে না রাখলেই হলো। ওরাই যে ভালো থাকতে, ভালো রাখতে শেখায়।।

- অনিবেন্দ্র রায়চৌধুরী

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন