বিস্কুট

আজ আজপানাদের একটু অন্য ধরনের গল্প নিয়ে এসেছি।
একটু মজার আর একটু ভাব্বার বিষয়ও রয়েছে।

এয়ারপোর্টের বোর্ডিং রুমে বসে ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করছিল এক তরুণী৷ 
অজ্ঞাত কারণে তার ফ্লাইট ডিলে হয়েছে এবং তারজন্য তাকে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হচ্ছিল৷ 
একঘেয়েমি কাটাতে সে একটা বই কিনল, এক প্যাকেট বিস্কুটও কিনলো সাথে৷ 
তারপর একটা চেয়ারে বসে পড়ল৷ 
তার ডান পাশের চেয়ারটা খালি ছিল যেটায় বিস্কুটের প্যাকেটটা রাখা৷ তার পাশের চেয়ারে বসে এক যুবক ম্যগাজিনের পাতা উল্টাচ্ছিল৷
মেয়েটা একটা বিস্কুট তুলে নিয়ে মুখে দিল, যুবকটিও সেখান থেকে একটা নিল৷
মেয়েটা বিরক্ত হলেও কিছু না বলে বইয়ের পাতায় মন দিল৷ কিন্তু ছেলেটার ঔদ্ধত্য সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল৷
মেয়েটা যতবার একটা করে বিস্কুট নিল অভদ্র যুবকটাও ততবার নিল৷
ভিতরে ভিতরে রাগে ফেটে পড়ছিল মেয়েটা, কিন্তু এরকম একটা জনবহুল পরিবেশে সীন ক্রিয়েট করতে চায়নি বলে চুপচাপ মেনে নিচ্ছিল৷
যখন আর একটা মাত্র বিস্কুট বাকি ছিল - মেয়েটা ভাবল দেখা যাক বেয়াদপ ছেলেটা কি করে! 
ছেলেটা যেন মেয়েটার মনের কথা বুঝতে পেরেই সেটা হাতে তুলে নিল, চাপ দিয়ে দুটুকরো করে অর্ধেকটা মেয়েটার হাতে ধরিয়ে দিল, এমনকি ছেলেটা তার দিকে একবার তাকালোও না৷
মেয়েটার সহ্যের সীমা ততক্ষনে ছাড়িয়ে গেছে৷ 
সে তড়াক করে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে ঝড়ের বেগে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল৷
প্লেন ছেড়ে যাবার সময় সানগ্লাস বের করার জন্য পার্সে হাত ঢুকালো মেয়েটি, প্রথমেই হাতে চলে এল বিস্কুটের প্যাকেট! 
তক্ষনি তার মনে পড়ে গেল যে, কেনার পর তার বিস্কুটের প্যাকেটটা আসলে সে পার্সের ভিতরেই রেখেছিল, বাইরে সে বেরই করেনি৷
আর এতক্ষন যাকে উছৃঙ্খল, রুড, অভদ্র, অসভ্য বেহায়া ভেবে মনে-মনে গালি দিচ্ছিল সেই লোকটা একটা 'টু' শব্দ না করে তার পুরোটা প্যাকেট ওর সাথে শেয়ার করেছে৷ এমনকি শেষ টুকরোটা পর্যন্ত৷
অনেক ছেলেই হয়তো খাবার শেয়ার করত, কিন্তু একটা কথাও না বলে, কোন ভাব জমানোর চেষ্টা না করে এমনকি তার দিকে একটা বারও না তাকিয়ে পরম সহানুভূতির সাথে কাজটি করেছে সে৷
লজ্জায়, অনুতাপে মরমে মরে যাচ্ছিল মেয়েটা আর আফসোস করছিল- হায়! এখন তো 'স্যরি' বলারও সুযোগ নাই!

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন